বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ব্লকচেইন ডেভলাপমেন্ট বিষয়ে

বাংলাদেশে ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার তথা ব্লকচেইন সিস্টেমে মালয়শিয়া প্রবাসীদের দেশে ইনস্ট্যান্ট টাকা আদান প্রদানের প্রক্রিয়া চালু হতে যাচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অধীনে ব্লকচেইন ক্রস বর্ডার রেমিটেন্স সার্ভিস।

এসসিবি কাজ করেছে বিকাশ এবং মালয়শিয়ার ভালইউ এর সাথে। এন্ট গ্রুপের ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। দুনিয়ায় সাম্প্রতিক এক বড় ঘটনা, আলিবাবার অনলাইন পেমেন্ট পাওয়ারহাউজ এন্ট গ্রুপের আইপিও লিস্টিং হতে যাচ্ছে হংকং ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জে। ইতিহাসের সবচে বড় আইপিও হবে এটি খুব সম্ভবত। চায়নার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিদ্বেষের কারণে নিউইয়র্ক বা নাসদাকে এর লিস্টিং হচ্ছে না। জ্যাক মা এবং তার কিছু এগজিকিউটিভ সরাসরি এন্ট গ্রুপের নীতিনির্ধারণের সাথে জড়িত। চায়না- আমেরিকা দ্বন্দ্বে চায়নার কোন বড় আঘাত থাকলে এই লিস্টিং সেটাই। যদিও আমেরিকার ইনভেস্টররা ইনভেস্ট করতে রেডি। এই বছর এপ্রিলে এন্ট গ্রুপ বিকাশের ২০% কিনে নিয়েছিল তথা বিকাশে ইনভেস্ট করেছিল। বাংলাদেশের ফাইনানশিয়াল সিস্টেম নিয়ে তাদের আলাদা প্ল্যান আছে।

যাই হোক, বাংলাদেশের ব্লকচেইনে যুক্ত হওয়া ভালভাবেই হচ্ছে। গত মার্চে এ সংশ্লিষ্ট রোড ম্যাপ প্রকাশ করেছে সরকার, ন্যাশনাল ব্লকচেইন স্ট্র্যাটেজি নামে। সেখানে কৃষি, জুডিশিয়ারি, রেমিটেন্সসহ নানা ক্ষেত্রে কীভাবে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে এর আপাত আলোচনা আছে। দেশের প্রাইমারি শিক্ষকদের পেনশন ডিজিটালি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছে আইবিএম। অর্থাৎ, দেশ এ নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবছে। এটা দেশের জন্য আশার কথা।

উদ্দেশ্য, এইসব কর্মকান্ডকে যথাসম্ভব দ্রুত, স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত করা, ও ফি কমানো।

ব্লকচেইন বা ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার কী?

উপরোক্ত স্ট্যাটাস দেয়ার পরে মনে হচ্ছিল ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার নিয়ে কিছু লেখা যায়।

লেজার মানে এখানে ধরেন হিসাবের খাতা।

এক গ্রামে কিছু লোক ছিল। তারা জিনিসপত্র আদান প্রদান করত, এবং তাদের এই বেচাকেনার হিসাব প্রথমে রাখতেন এক গ্রামের মুরুব্বি। কারণ তখনো লেখা আবিষ্কার হয় নি।

কিন্তু দেখা গেল মুরুব্বির স্মৃতির উপর নির্ভর করা যায় না সব সময়। ঝামেলা হয়। ইতিমধ্যে এক অবিশ্বাস্য প্রযুক্তি একজন বের করে ফেলেছে। গাছের ছাল বাকলে লিখে রাখার প্রযুক্তি।

এই জিনিশ পুরা হিসাব রাখার পদ্বতিটাকেই বদলে দিল। এরপর থেকে মানুষ ছাল বাকলের খাতায় হিসাব রাখতে শুরু করল।

কিন্তু এখানেও কিছু সমস্যা রয়ে গেল। মহাজন টাকা ধার দিছে ১০ হাজার। ৫ বছর পরে এসে বলে, টাকা ফেরত দিতে হবে ৫ লাখ। সুদে আসলে নাকি এত বেড়ে গেছে। অসহায় কৃষক বাধ্য হয় তার বন্দকী জমিটা ছেড়ে দিতে।

এই হিসাবের খাতার সমস্যাটা ছিল, এখানে দুই পক্ষের মধ্যে, ক্ষমতাবান পক্ষ তথা মহাজনের নিয়ন্ত্রণ ছিল খাতার উপরে।

ধরা যাক আপনি এখন আমাকে পেপালের মাধ্যমে ৫০ ডলার পাঠালেন। আমি সাথে সাথে ৫০ ডলার পেয়ে গেলাম। এই যে আমি পেলাম, ও আপনি পাঠালেন, এই টাকা কি প্লেনে করে আমার কাছে ফিজিক্যালি এসেছে?

না।

এটা এসেছে হিসাবের খাতায়। সংখ্যা হিসেবে, চুক্তি হিসেবে। পেপালকে আপনি বলেছেন আমি অমুককে ৫০ ডলার দিলাম। পেপাল সেটা বাস্তবায়ন করল, আপনার হিসাব থেকে বিয়োগ করে, আর আমার হিসাবে যোগ করে।

বা, আমি যখন কোন স্টক কিনলাম, স্টকের সার্টিফিকেট কি আমার কাছে আসে?

না।

বরং, এটা একটা চুক্তি বা হিসাবের সংখ্যা, তথা তথ্য হিসাবে থাকে।

এমনকি ডিজিটাল আইডেন্টিটিও তথ্য হিসাবে থাকে। ধরেন, ফেইসবুক আইডি একজনের, এটা ফিজিক্যাল ব্যক্তি না, তার কিছু তথ্য আমরা দেখি, এই তথ্য হিসাবেই তার অবস্থান।

তো, হিসাবের খাতায় এইসব তথ্য খুবী গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণত, যখন ব্যাংক ও একটি বিজনেস প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করল, তখন দুই পক্ষেই দুইটা হিসাবের খাতা থাকে। একইভাবে দেশে দেশে বিজনেস, দুই পক্ষই হিসাব রাখে। এইসব ভিন্ন ভিন্ন লেজারে গরমিল থাকতে পারে। এবং এইসব খাতাতে হিসাব তুলতে, চেক রিচেকে সময় লাগে। এবং এইখানে বেড়ে যায় ফি।

কিন্তু এরকম যদি কোন সিস্টেম হয় যে, সবারই একটা হিসাবের খাতা থাকবে। খাতাটি থাকবে একটা নেটওয়ার্কে, যেখানে অংশগ্রহণকারী পক্ষরা যুক্ত থাকবেন, এবং তারা এই খাতাটি দেখতে পারবেন?

এটাই ডিস্ট্রিবিউটেড লেজারের ধারণা।

এতে আদান প্রদানে সময় কমে যায়, ফি কমে যায়, এবং সব পক্ষের কাছে হিসাব থাকায় স্বচ্ছতা বাড়ে।

যেহেতু ডিস্ট্রিবিউটেড হিসাবের খাতায় (ব্লকচেইনে) সকল আদান প্রদানের তথ্য থাকবে, এবং সবার সংযুক্তি থাকবে, তাই কেউ ভুল তথ্য দিলে তা যুক্ত হবে না, রিজেক্ট হবে, কারণ এই তথ্য অন্যদের সাথে মিলবে না।

বিটকয়েন একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি, যেখানে ব্লকচেইন প্রযুক্তির একটা রূপ ব্যবহৃত হয়েছে। বলা যায় সবচাইতে সফল এবং পরিচিত ব্লকচেইনের ব্যবহার বিটকয়েন।

ধরা যাক, একজন ১ বিটকয়েন খরচ করে কেউ একটা ছাগল কিনলেন দোকান থেকে। ব্লকচেইনের হিসাবের খাতায় এটি যুক্ত হবে। তার কাছে আর কোন বিটকয়েন নাই। তিনি চালাকি করে আবার তার আগের কয়েন ব্যবহার করে একটা মুরগি কিনতে চাইলেন। তখন এই রিকুয়েস্ট যাবে, ও রিজেক্ট হয়ে ফিরে আসবে। কারণ হিসাবের খাতায় অলরেডি যুক্ত হয়ে গেছে ওই সময়ে এই কয়েনটি এই একাউন্ট থেকে আরেকটা একাউন্টে চলে গেছে।

এই যুক্তিতেই ব্লকচেইনকে নিরাপদ বলা হয়। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা আছে, যদি কোন ভাবে নেটয়ার্কের বেশীরভাগ ক্ষমতা কেউ নিয়ে নেয়, (হাইপথিটিক্যালি সম্ভব) তাহলে সে তার ইচ্ছামত তথ্য যুক্ত করতে পারবে, একটা পর্যায় পর্যন্ত। এটাকেই বলে ৫১% এটাক।

ব্লকচেইনের ব্যবহার

ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিটকয়েন অনুপ্রেরণা হলেও, অন্য সবাই যারা এটি ব্যবহার করছে তাদের উদ্দেশ্য, নীতিমালা বিটকয়েনের মত না।

বিটকয়েনের উদ্দেশ্যের মধ্যে আছে, কীভাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করা যায়।

কিন্তু ব্যাংক যখন ব্লকচেইন ব্যবহার করবে, তখন তাদের উদ্দেশ্য এটি হবে না। যেমন বিটকয়েনের ক্ষেত্রে বা ইথেরামের ক্ষেত্রে সকল তথ্য পাবলিক, যে কেউ এগুলি দেখতে পারবে। এই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে তাদের একটা জটিল প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। যেখানে, ব্লকে তথ্যগুলা যুক্ত থাকবে পাবলিকলি, কিন্তু আদান প্রদানের তথ্য প্রথমে যাবে ক্রিপ্টোগ্রাফিক পদ্বতিতে, সেখান থেকে মাইনাররা জটিল গাণিতিক হিসাবের মাধ্যমে এর ভেরিফিকেশন করবে, ও তথ্যকে ব্লকে যুক্ত করবে।

কর্ডা ব্লকচেইন বা আই বি এমের হাইপারলেজার ফ্যাব্রিক ইত্যাদির ক্ষেত্রে জিনিসটা ভিন্ন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের এই উদ্দেশ্য নেই যে সব তথ্য পাবলিক রাখতে হবে। তারা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির এক্সেস রাখে ওই তথ্যে। ফলে তাদের বিটকয়েন বা ইথেরামের মত প্রুফ-অফ-অয়ার্কের এনার্জি ব্যয় করা প্রক্রিয়ায় যাবার দরকার হয় না।

এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ব্লকচেইন নামটা ব্যবহার করতে চায় না, ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার বা সম্মিলিত হিসাব খাতা নাম ব্যবহার করতে চায়, বিশেষত ক্রিপ্টো কারেন্সির সাথে নিজেদের দূরত্ব প্রকাশ করতে।

এমনকি, কোন কোন কোম্পানি তাদের ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার সিস্টেম থেকে কোন কিছু মোছা যাবে না এই নিয়মও বাদ দিয়েছে। তাদের নীতিমালায় তথ্য মোছা যাবে, কিন্তু সেখানে একটা সংকেত থাকবে যে কিছু তথ্য মোছা হয়েছে।

অর্থাৎ, একেক ধরণের বিজনেস প্রয়োজনে একেক ধরণের সম্মিলিত হিসাব খাতার ব্যবহার হচ্ছে।

মি টু আন্দোলনের পরে আমরা একটা সমস্যা দেখছি সেক্সুয়াল কনসেন্ট বিষয়ে। ধরা যাক দুজন সম্মত হয়ে সেক্স করল আকাশ বাতাস স্বাক্ষী রেখে, করার আগে তারা মদ পান করেছিল। কিন্তু পরে একজন গিয়ে অভিযোগ করল তাকে রেপ করা হয়েছে, তার সম্মতি ছিল না। এই অবস্থায় কোর্টের সামনে দুইজন স্বাক্ষীকে উপস্থাপন করতে পারবে না অন্য ব্যক্তি।

আবার যে অভিযোগ করেছে, তারও প্রমাণ করার জায়গা নেই তার কনসেন্ট যে ছিল না। সে বলতে পারে অন্য ব্যক্তি তারে নেশাগ্রস্থ করে রেপ করেছে।

এই অবস্থায় আদালতের জন্য বিচার করা কঠিন হয়।

আবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেক্সের অভিযোগ দেখা যায়। একজন প্রেম করছে, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে। সেক্স করছে। পরে মা বাপের কথামত অন্যত্র বিয়ে করে ফেলল। এতে অন্য পক্ষ অনেক সময় মামলা করে।

কিন্তু এখানে মামলায় প্রতারণা ও রেপের মামলা হবে কি না, বা ওই সময় তাদের আশ্বাস কেমন ছিল তা বের করা কঠিন হয়।

এর সমাধান হাইপারললেজার তথা ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার দিয়ে করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রেমিক প্রেমিকা আগেই একটা ব্লকচেইন ভিত্তিক এপে তাদের আশ্বাসের ব্যাপার জানিয়ে রাখবে। সাথে সাথে এটা রেকর্ড হয়ে যাবে যখন উভয় পক্ষ সম্মত হবে। এটা অমোচনযগ্য হবে, কখনো মোছা যাবে না। এবং পাবলিকলি থাকলেও কার চুক্তি তা কখনো বুঝা যাবে না বাইরে থেকে, ক্রিপ্টোগ্রাফিক নিরাপত্তার কারণে।

কোন সমস্যা হলে, অর্থাৎ আশ্বাস দিয়ে বিয়ে করে নাই, বা দেখা গেল সে আশ্বাস দেয় নাই কিন্তু অপরপক্ষ আশ্বাসের অভিযোগ করছে, তখন তারা আদালতে চুক্তিটা দেখাতে পারে।

ডাচ ফার্ম লিগ্যাল থিংস, লিগ্যাল ফ্লিং নামে এমন একটি ডি-এপ তৈরি করেছে এইরকম, সেক্সের কনসেন্ট বিষয়ে।

কিন্তু এই এপের একটা বড় সমস্যা আছে। কনসেন্টের ক্ষেত্রে মানুষ যেকোন সময় না করতে পারে। ধরা যাক সে কনসেন্ট জানিয়েছিল গিয়ে গাঞ্জা খাবে ও সেক্স করবে। কিন্তু পরে গিয়ে তার মনে হল সেক্স করবে না। এক্ষেত্রে, তার কনসেন্টকে সম্মান করতে হবে লিগ্যালি ও এথিক্যালি।

এই কারণেই ম্যারিটাল রেপ আন এথিক্যাল এবং একে ইল্লিগ্যাল করা উচিত সভ্য দেশে।

এবং দার্শনিকভাবে এই ধরণের এপের সমস্যা হল, এগুলি ডিজিটাল বিয়ে প্রথার মধ্য দিয়েই যায়। এর চাইতে তো ডিজিটাল কাজী অফিসের এপ করলেই হয়, যেখানে দুই বা ততোধিক স্বাক্ষী থাকবে, এবং তারা দীর্ঘ বা স্বল্পমেয়াদী চুক্তিতে থাকবে।

বাংলাদেশে কোন কোন জায়গায় ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে

বিভিন্ন দেশ মেডিকেল, সাপ্লাই চেইন, সরকারি ফান্ডিং, ব্যাংকিং, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কৃষি সাপ্লাই চেইন, সরকারী ফান্ডিং এ ব্লকচেইন প্রযুক্তি ভালোভাবে ব্যবহার করা গেলে এসব জায়গায় যে বড় দূর্নীতি হয় তা বন্ধ করা সম্ভব।

সরকারী ফান্ডের একটা সমস্যা হল, যে কাজের জন্য টাকা দেয়া হয়, ওই কাজে অল্প টাকাই যেতে পারে। বাকি অংশ পথে নাই হয়ে যায়। কিন্তু একটি ওপেন হিসাবের খাতায় যদি লেখা থাকে আদান প্রদানের তথ্য, এবং কাজে কত ব্যবহৃত হল সেই তথ্য, এবং এই খাতা যদি পাবলিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে পারে তাহলে ব্যাপারটা স্বচ্ছ হয়ে উঠবে।

অনেক মানুষের বড় স্বার্থ জড়িত এখানে। তাই এটি সম্ভবত হবে না, বাস্তবতার বিচারে। কিন্তু সম্ভব। ডিজিটাল আইডেন্টিটি ম্যানেজমেন্টেও ব্লকচেইন কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে বাংলাদেশে। ডিজিটাল আইডি নিয়ে সমালোচনা রয়েছে, যেমন এটি রাষ্ট্রকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ নিতে সাহায্য করে এমন। কিন্তু কভিড-১৯ ক্রাইসিস এর প্রয়োজনীয়তাও দেখাতে পেরেছে। ইতালিতে বেকার ভাতার ব্যবস্থা ক্র্যাশ করেছিল, আর এদিকে সরকারী অফিসও তখন বন্ধ। আমেরিকাতে ওয়াশিংটন রাজ্যের ৬৫০ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়ে গেছে চুরি করা আইডেন্টিটি দেখিয়ে। এগুলি প্রমাণ করতে পেরেছে একটা শক্ত ডিজিটাল আইডেন্টিটি ম্যানেজমেন্ট দরকার রাষ্ট্রের। যেমন ইউরোপের দেশ এস্তনিয়াতে এমন ভালো ডিজিটাল আইডেন্টিটি ব্যবস্থা থাকায় তাদের এমন সমস্যায় পড়তে হয় নি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল আইডি ব্যবস্থাপনা অনেক বুরোক্রেটিক অর্থহীন কাজ এবং ব্যয় কমিয়ে ফেলে জনগণের দুর্ভোগ কমাতে পারে। আবার একইসাথে এটা ভালো ভাবে মনে রাখা দরকার যে, এমন ব্যবস্থাকে মিস ইউজ করে সরকার ও রাষ্ট্রের ক্ষমতাধর বাহিনী মানুষকে হয়রানি করতে পারে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই আগে, এগুলি কীভাবে ব্যবহার করা হবে, কোন প্রেক্ষিতে কার এক্সেস থাকবে তা গণতান্ত্রিক পদ্বতিতে আইন করে ঠিক করা জরুরী।

প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, এটি নিরঙ্কুশ ভালো কখনোই হয়। কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার ক্ষতিকর দিকগুলি নিয়ন্ত্রণের কি উপায় রাখা হচ্ছে, এগুলির উপর নির্ভর করে কেমন প্রভাব পড়বে সেই প্রযুক্তির। কোন প্রযুক্তিকে বুঝার ক্ষেত্রে নিল পোস্টম্যানের এই লেখাটি মাস্ট রিড। নীতি নির্ধারকেরা এটি পড়লে ও অনুধাবন করতে পারলে ভালো।

বাংলাদেশের ব্লকচেইন ফ্রেম ওয়ার্কের লিংক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *